দুবাইয়ে কোরআনিক পার্ক

ডেক্স রিপোর্ট • দুবাইয়ের কোরআন পার্ক পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে বর্ণিত বিভিন্ন উদ্ভিদ এবং অলৌকিক মহিমা-ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে এই পার্কটিতে। সাথে আছে নির্মল বিনোদনের আয়োজন মুসলমানরাই শুধু নয় সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এই ব্যতিক্রমী পার্ক দেখার সুযোগ রয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য কোনো ফি বা টিকেট লাগবে না। বিনামূল্যেই প্রবেশে করতে পারবেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই মিউনিসিপালিটির উদ্যোগে আল খাওয়ানিজ অঞ্চলের ৬০ হেক্টরও ৬ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্কটি।

পবিত্র কোরআনে যেসব গাছ-গাছালি ও জীব-বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ আছে, তার সবই পার্কটিতে রয়েছে। কোরআনে বর্ণিত অলৌকিক ঘটনাবলির চিত্রায়নও করেছে চিত্তাকর্ষকভাবে। কোরআন পার্কে উদ্ভিদের বাগান রয়েছে। এসব উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক ও ঔষধি উপকারিতা উদ্ভিদগুলোর মধ্যে যেগুলো পাওয়া যাবে,সেই সব রয়েছে এই পার্কে।

দুবাইয়ে কোরআনিক পার্ক

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৬০ হেক্টর ইসলামিক এই পার্কে ধর্মগ্রন্থে উল্লিখিত প্রচুর গাছ রয়েছে। কোরআন পার্কের প্রধান ফটক দিয়ে একটু এগিয়ে গেলে দেখা মিলে কাচের হাউস। এর ভেতরে কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত উদ্ভিদগুলো বিশেষ তাপমাত্রা এবং পরিবেশগত বিশেষ নির্ণায়ক যন্ত্রের অধীনে রেখেছে। পাশাপাশি এতে কোরআনে উল্লিখিত বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদও রয়েছে। পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত ৫৪টি গাছপালা, যার বেশিরভাগই এই আইকনিক গ্লাস হাউসের মধ্যে সুরক্ষিত। যেমন, জলপাই, ডুমুর, রসুন, লিক, পেঁয়াজ, ভুট্টা, মসুর, গম এবং শসা সহ বৈজ্ঞানিক ও ঔষধি গাছগুলি জলবায়ু নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে এই বিস্তৃত কাঁচের ছাউনির নীচে জন্মানো হয়। গ্লাস হাউসের প্রবেশ করতে ৫ দেরহাম মূল্যের টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।

এই পার্কটির অন্যতম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ‘অলৌকিক গুহা’। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত গুহার আদলে এটি সাজানোর হয়েছে। তবে দক্ষিণ স্পেনের ‘আল-আন্দালুস’ বাগানের রূপ-শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা এই গুহায় পবিত্র কোরআনের অলৌকিক ঘটনাবলীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এতে পবিত্র কোরআনের অলৌকিক বিষয়গুলো প্রদর্শন করে।

এছাড়াও পার্কটিতে দৃষ্টিনন্দন বাগান, শিশু কর্নার, আউটডোর থিয়েটার, ঝরনা, গ্লাস বিল্ডিং, মরূদ্যান, লেক, রানিং ট্রেক, সাইকেল ট্রেকসহ রয়েছে নানা আয়োজন রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। আছে ওয়াই-ফাই সিস্টেম, মোবাইল ফোন চার্জিং স্টেশন, বিশ্রামের জন্য ছায়াযুক্ত আসন।

দুবাইয়ে কোরআনিক পার্কের দৃশ্য

পার্কে দর্শনার্থী ইসলামী ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আমিরাতে এই পার্কটি ইসলামী সাংস্কৃতিক ও সভ্যতাগত ভূমিকা রয়েছে। পার্কের চারপাশে শিথিল এবং শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা উপাদান রাখা হয়েছে। মূল প্রবেশদ্বার জুড়ে রয়েছে অলৌকিক গুহা, যেখানে কোরআনে উল্লিখিত সাতটি অলৌকিক ঘটনা চিত্রিত করা হয়েছে। যার মধ্যে হযরত ঈসার কাদামাটি থেকে একটি পাখি তৈরির কাহিনী রয়েছে। পার্কটিতে ১২টি বাগানের মধ্যে যাতে ৫৪ ধরনের গাছপালা কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছিলো, সবই আছে এই পার্কে। এটি মনোমুগ্ধকর একটি পার্ক।

দর্শনার্থী মিনহাজুল আলম পিয়ারু বলেন, এই পার্ক বিনোদনমূলক একটি স্থান। মনোরম পরিবেশ পরিবার নিয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য ভাবে চলা যায়। বাচ্চারা একটি খোলা জায়গায় সময় কাটাতে পারে। পার্কে ঘুরে বেড়াতে পারে বা সাইকেল চালিয়ে পার্কে চারিদিকে ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। এই পার্কে একটি গ্রিনহাউজ রয়েছে। সবুজের বাগান কোরআনে উল্লিখিত গাছপালা এবং গাছে পরিপূর্ণ- আদা এবং কালো বীজ, জলপাই, ডুমুর, সিডর বিভিন্ন গাছ রয়েছে। যা দিয়ে ওষুধ তৈরি করা যায়। এই পার্কে এসে অনেক কিছু অভিজ্ঞতা নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি পর্যটকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ এই পার্কটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *